পৃথিবী প্রতি ঘন্টায় ১৬৭০ কি.মি. বেগে ( সেকেন্ডে ৪৬৫ মি. বা ১০৭০ মাইল /ঘণ্টা) নিজের অক্ষের চারদিকে ঘুরছে। এই ঘুর্নণের দিক হচ্ছে পশ্চিম থেকে পূবে। আর এই ঘূর্নণের দিকই নির্ধারণ করেছে কোন দিক মেরু হবে। এই যে ঘুর্নণ বেগ -এটি কার্যকর শুধুমাত্র বিষূব অঞ্চলের জন্য - যা দুই মেরুর ঠিক মাঝে অবস্থিত। বিষুব অঞ্চল থেকে যতই মেরুর দিকে যাওয়া হবে ততই এই বেগ হ্রাস পেতে থাকবে।
বিষুব রেখা থেকে মেরুর দিকে গেলে ঘূর্নণের হ্রাসপ্রাপ্ত মান বের করতে হলে স্বাভাবিক মানের সাথে অক্ষাংশের Cos এর মান গুণ করতে হবে।
যেমন, ৪৫ ডিগ্রি অক্ষাংশে এই বেগ হবে 1670 *Cos 45 Km/h= 1670*.707 = 1180 Km/h।
এই মান কমতে কমতে মেরুতে গিয়ে হয় জিরো। কারণ মেরুতে অক্ষাংশ হল ৯০ ডিগ্রি। Cos 90 = 0 বলে গুনফল হয় জিরো।
এটাতো গাণিতিক মত। তবে গণিত কখোনই অসত্য কথা বলে না। মেরুতে বেগ কেন জিরো এটা একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করি।
গ্রামে আগেকার দিকে মাঠের মাঝখানে একটি খুঁটি গেঁড়ে খুঁটির সাথে গরুকে বেঁধে খুঁটির চারপাশে চক্রাকারে ঘোরানো হত। এতে করে ধান গাছে অল্প যে কিছু ধান থেকে যেত তা গরুর পায়ের চাপে ঝরে পড়ে নিচে জমা হত। আমরা যদি একটু চিন্তা করি, রশির একেবার প্রান্ত বিন্দুতে ঘূর্নণ বেগ সর্বোচ্চ। খুঁটির দিকে কাছাকাছি হলে ক্রমেই বেগ কমতে থাকবে। কারণ, যে সময়ে বাইরের প্রান্ত বিন্দু এক চক্কর দেবে সেই সময়েই ভেতরের যে কোন বিন্দুও এক চক্কর দিয়ে দেবে। কিন্তু ভেতরের যে কোন বিন্দু চক্কর দিতে ক্ষুদ্রতর বৃত্ত অনুসরণ করবে। সময় একই লাগায় ভেতরের বিন্দুর বেগ কম হতে হবে।
কল্পনায় এবার পৃথিবীকে একবার পশ্চিম থেকে পূবে চক্কর দেওয়ান। অথবা একটি আপেল/ কমলা হাতে নিয়ে একইভাবে ঘোরান। দেখবেন প্রান্তবিন্দুর দিকে ক্রমান্বয়ে বেগ কম এবং একেবারে মেরুতে জিরো।
মূল আলোচনা থেকে মনে হয় বিচ্যুত হচ্ছি।
আসলে এই ঘূর্নণের সাথেই মেরুর ব্যাপার জড়িত।
পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূবে আবর্তন করায় এর দুই আবর্তন অক্ষ উত্তরে ও দক্ষিণে অবস্থিত। আসলে এই অক্ষটি হচ্ছে কেন্দ্র দিয়ে দুই মেরুর সংযোজক সরলরেখা। দুই মেরু বিন্দু পৃথিবীর আবর্তন অক্ষের দুই প্রান্ত বিন্দু। ফলে এরা দুই বিশেষ বিন্দু যেমন বিশেষ বিন্দু আর নেই।
পৃথিবী যদি উত্তর থেকে দক্ষিণে বা দক্ষিণ থেকে উত্তরে আবর্তন করত তবে পূবে ও পশ্চিমে এই দুই বিশেষ বিন্দুদ্বয় সৃষ্টি হত।
আবার, উত্তর ও দক্ষিণ মেরু যথাক্রমে পৃথিবীর সর্ব উত্তর ও সর্ব দক্ষিণের বিন্দু। বিন্দুগুলো প্রকৃত/আক্ষরিক অর্থেই প্রান্তিক। কিন্তু একটু চিন্তা করুন পূর্ব বা পশ্চিমে কি এমন কোন প্রান্তিক অবস্থান আছে যাকে আমরা সবচেয়ে পূর্ব/ পশ্চিম বলবো?
ম্যাপে আমরা যেটাকে পূর্ব / পশ্চিম বলি সেটা শুধুই আপেক্ষিক। বেশিরভাগ ম্যাপেই আমেরিকাকে পশ্চিমে ও ওশোনিয়াকে পূর্বে দেখানো হয়। তাই বলে বলা যাবে না যে আমেরিকাই সবচেয়ে পূর্বের জায়গা। ইলাস্ট্রেটেড অক্সফোর্ড ডিকশনারির পেছনে একটি ওয়ার্ল্ড ম্যাপ আছে। তাতে আমেরিকাকে দেখানো হয়েছে রাশিয়ার ডানে - মানে পূবে- একেবারে পৃষ্টার ডান পাশে। দেখানো যেতেই পারে। তার মানে এই নয় যে আমেরিকাই এখন পূবে চলে গেছে। ঐ ম্যাপে আফ্রিকা ও ইউরোপ একেবারে বাঁয়ে- মানে পশ্চিমে। কিন্তু কোনটাই পরম পশ্চিম বা পরম পূর্ব নয়।
ধরুন, আপনি পূর্ব-পশ্চিমের কোন অবস্থান থেকে (মানে কোন একটি দ্রাঘিমাংশ বিন্দু থেকে) (ধরুন) পূবে যাচ্ছেন। যতই পূবে যান না কেন পশ্চিম সব সময় আপনার পেছনেই থাকবে।
যেমন আপনি বাংলাদেশ থেকে পূবে যেতে থাকলে ক্রমে মায়ানমার, চীন, তাইওয়ান, জাপান, প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে আমেরিকায় পৌঁছে যাবেন। আরো যেতে থাকলে মেক্সিকো, কিউবা, মরক্কো, আলজেরিয়া, মধ্য প্রাচ্য, পাকিস্তান, ভারত হয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসবেন। নাক বরাবর যদি হাঁটতে থাকেন, সব সময়ই কিন্তু আপনার পেছনে পশ্চিম থাকবে।
কিন্তু এবার আপনি যদি বলেন, না, পূর্ব-পশ্চিমে পরিধি পাড়ি না দিয়ে আমি উত্তর-দক্ষিণ বরাবর পাড়ি দেব। এই অভিযানে স্বাগতম। এবারে আপনি উত্তর দিকে যাত্রা করলেন। তাহলে ভারত, ভুটান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়া পাড়ি দিয়ে আপনি চলে যাবেন সুমেরুতে।
ধরুন ঠিক এই মুহূর্তে আপনি সুমেরু (উত্তর মেরু) থেকে আরেক পা বাড়ালেন (এত পথ আপনাকে হাঁটিয়েই নিচ্ছি) । একটু আগে আপনার পেছনে ছিলো দক্ষিণ। এবার? পেছনে উত্তর আর সামনে দক্ষিণ।
হায়! হায় ! আপনিতো ঘোরেননি, কিন্তু দিক যে পাল্টে গেলো! না মাথায়ও কোন সমস্যা নয়।
যাক, কিছু মনে না করে আপনি যখন আরো এগিয়ে আমেরিকা মহাদেশের উপর দিয়ে চলে বাংলাদেশের প্রতিপাদ স্থান চিলি পার হয়ে দক্ষিণ মেরু ক্রস করলেন, আরেকটি ধাক্কা! সামনে এতক্ষণ দক্ষিণ ছিল, তা আবার ঘুরে উত্তর হয়ে গেলো।
এটাই হলো উত্তর ও দক্ষিণ বিন্দুর বিশেষত্ব।
কিন্তু পূর্ব বা পশ্চিমের কোন বিন্দুর এমন কোন বিশেষত্ব নেই, কোন প্রান্তিক বিন্দু নেই, তাই মেরুও নেই।
বিষুব রেখা থেকে মেরুর দিকে গেলে ঘূর্নণের হ্রাসপ্রাপ্ত মান বের করতে হলে স্বাভাবিক মানের সাথে অক্ষাংশের Cos এর মান গুণ করতে হবে।
যেমন, ৪৫ ডিগ্রি অক্ষাংশে এই বেগ হবে 1670 *Cos 45 Km/h= 1670*.707 = 1180 Km/h।
এই মান কমতে কমতে মেরুতে গিয়ে হয় জিরো। কারণ মেরুতে অক্ষাংশ হল ৯০ ডিগ্রি। Cos 90 = 0 বলে গুনফল হয় জিরো।
এটাতো গাণিতিক মত। তবে গণিত কখোনই অসত্য কথা বলে না। মেরুতে বেগ কেন জিরো এটা একটি উদাহরণের সাহায্যে বোঝার চেষ্টা করি।
গ্রামে আগেকার দিকে মাঠের মাঝখানে একটি খুঁটি গেঁড়ে খুঁটির সাথে গরুকে বেঁধে খুঁটির চারপাশে চক্রাকারে ঘোরানো হত। এতে করে ধান গাছে অল্প যে কিছু ধান থেকে যেত তা গরুর পায়ের চাপে ঝরে পড়ে নিচে জমা হত। আমরা যদি একটু চিন্তা করি, রশির একেবার প্রান্ত বিন্দুতে ঘূর্নণ বেগ সর্বোচ্চ। খুঁটির দিকে কাছাকাছি হলে ক্রমেই বেগ কমতে থাকবে। কারণ, যে সময়ে বাইরের প্রান্ত বিন্দু এক চক্কর দেবে সেই সময়েই ভেতরের যে কোন বিন্দুও এক চক্কর দিয়ে দেবে। কিন্তু ভেতরের যে কোন বিন্দু চক্কর দিতে ক্ষুদ্রতর বৃত্ত অনুসরণ করবে। সময় একই লাগায় ভেতরের বিন্দুর বেগ কম হতে হবে।
কল্পনায় এবার পৃথিবীকে একবার পশ্চিম থেকে পূবে চক্কর দেওয়ান। অথবা একটি আপেল/ কমলা হাতে নিয়ে একইভাবে ঘোরান। দেখবেন প্রান্তবিন্দুর দিকে ক্রমান্বয়ে বেগ কম এবং একেবারে মেরুতে জিরো।
মূল আলোচনা থেকে মনে হয় বিচ্যুত হচ্ছি।
আসলে এই ঘূর্নণের সাথেই মেরুর ব্যাপার জড়িত।
পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূবে আবর্তন করায় এর দুই আবর্তন অক্ষ উত্তরে ও দক্ষিণে অবস্থিত। আসলে এই অক্ষটি হচ্ছে কেন্দ্র দিয়ে দুই মেরুর সংযোজক সরলরেখা। দুই মেরু বিন্দু পৃথিবীর আবর্তন অক্ষের দুই প্রান্ত বিন্দু। ফলে এরা দুই বিশেষ বিন্দু যেমন বিশেষ বিন্দু আর নেই।
পৃথিবী যদি উত্তর থেকে দক্ষিণে বা দক্ষিণ থেকে উত্তরে আবর্তন করত তবে পূবে ও পশ্চিমে এই দুই বিশেষ বিন্দুদ্বয় সৃষ্টি হত।
আবার, উত্তর ও দক্ষিণ মেরু যথাক্রমে পৃথিবীর সর্ব উত্তর ও সর্ব দক্ষিণের বিন্দু। বিন্দুগুলো প্রকৃত/আক্ষরিক অর্থেই প্রান্তিক। কিন্তু একটু চিন্তা করুন পূর্ব বা পশ্চিমে কি এমন কোন প্রান্তিক অবস্থান আছে যাকে আমরা সবচেয়ে পূর্ব/ পশ্চিম বলবো?
ম্যাপে আমরা যেটাকে পূর্ব / পশ্চিম বলি সেটা শুধুই আপেক্ষিক। বেশিরভাগ ম্যাপেই আমেরিকাকে পশ্চিমে ও ওশোনিয়াকে পূর্বে দেখানো হয়। তাই বলে বলা যাবে না যে আমেরিকাই সবচেয়ে পূর্বের জায়গা। ইলাস্ট্রেটেড অক্সফোর্ড ডিকশনারির পেছনে একটি ওয়ার্ল্ড ম্যাপ আছে। তাতে আমেরিকাকে দেখানো হয়েছে রাশিয়ার ডানে - মানে পূবে- একেবারে পৃষ্টার ডান পাশে। দেখানো যেতেই পারে। তার মানে এই নয় যে আমেরিকাই এখন পূবে চলে গেছে। ঐ ম্যাপে আফ্রিকা ও ইউরোপ একেবারে বাঁয়ে- মানে পশ্চিমে। কিন্তু কোনটাই পরম পশ্চিম বা পরম পূর্ব নয়।
ধরুন, আপনি পূর্ব-পশ্চিমের কোন অবস্থান থেকে (মানে কোন একটি দ্রাঘিমাংশ বিন্দু থেকে) (ধরুন) পূবে যাচ্ছেন। যতই পূবে যান না কেন পশ্চিম সব সময় আপনার পেছনেই থাকবে।
যেমন আপনি বাংলাদেশ থেকে পূবে যেতে থাকলে ক্রমে মায়ানমার, চীন, তাইওয়ান, জাপান, প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে আমেরিকায় পৌঁছে যাবেন। আরো যেতে থাকলে মেক্সিকো, কিউবা, মরক্কো, আলজেরিয়া, মধ্য প্রাচ্য, পাকিস্তান, ভারত হয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসবেন। নাক বরাবর যদি হাঁটতে থাকেন, সব সময়ই কিন্তু আপনার পেছনে পশ্চিম থাকবে।
কিন্তু এবার আপনি যদি বলেন, না, পূর্ব-পশ্চিমে পরিধি পাড়ি না দিয়ে আমি উত্তর-দক্ষিণ বরাবর পাড়ি দেব। এই অভিযানে স্বাগতম। এবারে আপনি উত্তর দিকে যাত্রা করলেন। তাহলে ভারত, ভুটান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়া পাড়ি দিয়ে আপনি চলে যাবেন সুমেরুতে।
ধরুন ঠিক এই মুহূর্তে আপনি সুমেরু (উত্তর মেরু) থেকে আরেক পা বাড়ালেন (এত পথ আপনাকে হাঁটিয়েই নিচ্ছি) । একটু আগে আপনার পেছনে ছিলো দক্ষিণ। এবার? পেছনে উত্তর আর সামনে দক্ষিণ।
হায়! হায় ! আপনিতো ঘোরেননি, কিন্তু দিক যে পাল্টে গেলো! না মাথায়ও কোন সমস্যা নয়।
যাক, কিছু মনে না করে আপনি যখন আরো এগিয়ে আমেরিকা মহাদেশের উপর দিয়ে চলে বাংলাদেশের প্রতিপাদ স্থান চিলি পার হয়ে দক্ষিণ মেরু ক্রস করলেন, আরেকটি ধাক্কা! সামনে এতক্ষণ দক্ষিণ ছিল, তা আবার ঘুরে উত্তর হয়ে গেলো।
এটাই হলো উত্তর ও দক্ষিণ বিন্দুর বিশেষত্ব।
কিন্তু পূর্ব বা পশ্চিমের কোন বিন্দুর এমন কোন বিশেষত্ব নেই, কোন প্রান্তিক বিন্দু নেই, তাই মেরুও নেই।
1 মন্তব্য(গুলি):
Write মন্তব্য(গুলি)Mdsumon
Reply