১৪ জানুয়ারী, ২০১৬

    ১ এর পরে ৫টি শুন্য দিলে এক লাখ, ৬টি দিলে ১০ লাখ বা ১ মিলিয়ন হয়। ৯টি শুন্য দিলে হয় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি। কিন্তু আরো বেশি দিলে? সেটাই জেনে নিই, চলুন। উল্লেখ্য, আগে সংখ্যা পদ্ধতির ব্রিটিশ ও আমেরিকান নিয়ম ভিন্ন ছিল। যেমন, আগে বিলিয়ন বলতে ব্রিটিশরা বুঝত 1012। কিন্তু, বর্তমানে ওরাও আমেরিকানদের পথে চলছে।
    ১ সেপ্টিলিয়ন = ১ এর পরে ২৪টি শুন্য 

    ১ মিলিয়ন = 10। অর্থ্যাৎ, ১ এর পরে ৬ খানা শুন্য।
    ১ বিলিয়ন = 109
    ১ ট্রিলিয়ন =1012
    ১ কোয়াড্রিলিয়ন = 1015
    ১ কুইন্টিলিয়ন = 1018
    ১ সেক্সটিলিয়ন = 1021
    ১ সেপ্টিলিয়ন = 1024
    ১ অক্টিলিয়ন = 1027
    ১ ননিলিয়ন = 1030
    ১ ডেসিলিয়ন = 1033
    ১ উনডেসিলিয়ন = 1036
    ---------------------
    ১ ভিজিন্টিলিয়ন = 1063
    ১ সেন্টিলিয়ন = 10303
    ১ গুগোল (Googol) = 10100
    ১ গুগোলপ্লেক্স (Googolplex) = 10Googol (1010100)
    আরো বেশি বেশি দেখতে চাইলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
    সূত্রঃ
    ১। ইংরেজি উইকিপিডিয়াঃ বড় বড় সংখ্যাদের নাম

    Category: articles

    ৮ নভেম্বর, ২০১৫


    নিউট্রিনো কী জিনিস?
    নিউট্রিনো পদার্থের অন্যতম মৌলিক কণিকা। আচরণ ও বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে এটি আবার অন্যতম রহস্যময়ও বটে। এদের সাথে আমাদের চেনা ইলেকট্রনের অনেকটা মিল আছে। তবে মারাত্মক এক অমিলও আছে বটে, ইলেকট্রনের মত এদের কিন্তু কোন আধান (চার্জ) নেই। ইলেকট্রনের মধ্যে ক্রিয়াশীল তড়িচ্চৌম্বক বল দ্বারা এরা প্রভাবিত হয় না। একটি দুর্বল অতি-পারমাণবিক বল দ্বারা এরা প্রভাবিত হয় যার পাল্লা (ক্রিয়াশীল হবার জন্যে প্রয়োজনীয় দূরত্ব) তড়িচ্চৌম্বক বলের চেয়ে অনেক স্বল্প এবং এরা এই বলের প্রভাব কাটিয়ে বহুদূর পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। যদি এদের ভর থাকে তবে এরা অন্য ভারী কণিকাদের সাথে মাধ্যাকর্ষণজনিত মিথষ্ক্রিয়া (interaction) করবে, কিন্তু চার প্রকার মৌলিক বলের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি দুর্বল।
    তিন প্রকার নিউট্রন সম্পর্কে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। এদের জানা বৈশিষ্ট্যের বাইরে অন্য কোন গুণাবলী না থাকলে বলা যায় অন্য কোন ধরনের নিউট্রনের অস্তিত্ব নেই। প্রত্যেক প্রকার বা ফ্লেভার (Flavor) এর নিউট্রন এক একটি আধানযুক্ত কণিকার সাথে সম্পৃক্ত এবং এদের নামকরণও হয় সেভাবেই। যেমন ইলেকট্রনের সাথে সংশ্লিষ্ট নিউট্রনের নাম ইলেকট্রন নিউট্রিনো (ne)।  অন্য দুটি নিউট্রন মিউন (Muon-m) ও টাউ (Tau-t) নামক ইলেকট্রনের ভারী প্রকরণের সাথে সংশ্লিষ্ট।

    নিউট্রিনোর সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ
    ১৯৩১- উলফগ্যাং পাউলি একটি অপরিচিত কণিকার ভবিষ্যদ্বাণী করেন। কিছু কিছু তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সময় শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি ভঙ্গ হবে বলে মনে হওয়াই ছিল এই অনুমানের ভিত্তি। পাউলি মতামত দেন যে এই হারানো শক্তি কোন অপরিচিত নিরপেক্ষ কণিকা হয়তো বহন করে থাকবে।
    ১৯৩৪- এনরিকো ফার্মি তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের একটি পূর্ণাংগ তত্ত্ব নির্ণয় করেন। এতে পাউলির অনুমিত কণিকা নিউট্রনও স্থান পায়। ফার্মি-ই একে নিউট্রিনো নাম দেন। ইতালি ভাষায় এর অর্থ ক্ষুদ্র নিরপেক্ষ কণা। তত্ত্বে নিউট্রিনোকে স্থান দিয়ে ফার্মি অনেকগুলো পর্যবেক্ষণমূলক ফলাফলের ব্যাখ্যা দিতে সমর্থ হন।
    ১৯৫৯- ক্লাইড কোয়ান ও ফ্রেড রাইনের হাতে নিউট্রিনোর প্রত্যাশিত বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ কণিকা আবিষ্কার হল। এই আবিষ্কারের জন্যেই ১৯৯৫ সালে, অনেক দিন পরে হলেও ফ্রেড রাইন নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। পরে জানা যায়, এই নিউট্রিনোটি ইলেকট্রনের সঙ্গী।
    ১৯৬২- ব্রুকহ্যাভেন নাশনাল ল্যাবরেটরি, সার্ন ও ইউরোপিয়ান ল্যাবরেটরি ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ একটি বিস্ময়কর আবিষ্কার করে। মিউনের সাথে সংশ্লিষ্টতায় উৎপন্ন নিউট্রিনো ইলেকট্রনের সাথে জড়িত নিউট্রিনোর মত একই আচরণ করে না। সত্যি বলতে, ২য় প্রকার নিউট্রিনো খুঁজে পাওয়া গেল এখানেই।
    ১৯৬৮- সম্পাদিত হল সূর্যের দহনের উৎপন্ন নিউট্রিনো শনাক্ত করার প্রথম পরীক্ষা। গভীর মাটির নিচে তরল ক্লোরিন রেখে দিয়ে সম্পাদিত এই পরীক্ষায় প্রত্যাশার চেয়ে অর্ধেকের কম নিউট্রিনো ধরা পড়ল। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা সৌর নিউট্রিনো সমস্যার (solar neutrino problem) উৎপত্তি এখান থেকেই। কেউ কেউ মত দিলেন, হারানো নিউট্রিনোগুলো হয়তো অন্য প্রকরণে রূপান্তরিত হয়ে গেছে যা অশনাক্তযোগ্য। তবে, প্রত্যাশিত নিউট্রিন কণার হার প্রদানকারী সৌর মডেলের অনির্ভরযোগ্যতাই বড় সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়।
    ১৯৭৮- স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে সন্ধান পাওয়া গেল টাউ কণার। দেখা গেল এটি ইলেকট্রন ও মিউনের চেয়ে ভারী প্রকরণ। ১৯৩১ সালে পাউলি যে কারণে নিউট্রিনোর ভবিষ্যদ্বাণি করেছিলেন, এই কণাটিতে সেই একই সমস্যা- শক্তির ভারসাম্যহীনতা রয়েই গেল। ফলে, টাউএর সাথে সংশ্লিষ্ট আরেকটি তৃতীয় নিউট্রিনোর কল্পনা করতে হলো যা এখনো ধরা যায়নি।
    ১৯৮৫- মূলত প্রোটন ক্ষয়ের সন্ধানরত ওয়াটার ডিটেকটর একই সাথে নিউট্রিনোও সন্ধান করে দেখল প্রত্যাশার চেয়ে কম পরিমাণ মিউন-নিউট্রিনোর মিথস্ক্রিয়া চোখে পড়ছে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল এটা কোন যান্ত্রিক ত্রুটির ফসল।
    এ বছরই রাশিয়ার একটি দল অশূন্য নিউট্রিনোর ভর পরিমাপের কথা জানালেন। পরিমাপকৃত ভর অতিমাত্রায় ক্ষুদ্র (ইলেকট্রনের ভরের চেয়েও ১০,০০০ গুণ কম)। কিন্তু একই পরীক্ষা পুনরায় করতে গিয়ে দেখতে হলো হতাশার মুখ।
    ১৯৮৭- ক্যামিওকান্ডে এনং আইএমবি নামক ডিটেকটর দুটি 1987A নামক সুপারনোভা থেকে নিউট্রিনোর যুগপৎ উদগীরণ শনাক্ত করল।
    ১৯৮৮-  মিউন ও ইলেকট্রন নিউট্রিনো আরো ভালোভাবে শনাক্তে সক্ষম ক্যামিওকান্ডে নামক প্রোটন ক্ষয়ের সন্ধানরত আরেকটি ওয়াটার ডিটেকটর মিউন-নিউট্রিনো মিথস্ক্রিয়ার প্রতাশিত পরিমাণের মাত্র ৬০% শনাক্ত করতে সক্ষম হলো।
    ১৯৮৯- এবার নিউট্রিনো টার্গেট হিসেবে পানির বদলে আয়রন (লৌহ) বেছে নেওয়া নেওয়া হল। Frejus ও NUSEX নামক ক্যামিওকান্ডে ও আইএমবি এর চেয়ে অনেক ছোট দুটি ডিটেকটর দিয়ে প্রত্যাশিত সব নিউট্রিনোকেই জালে ভর্তি করা গেল।
    পাশাপাশি সার্নের লার্জ ইলেকট্রন-পজিট্রন (LEP) এ্যক্সিলারেটর বলল যে পরিচিত তিন নিউট্রিনোর বাইরে আর কোন নিউট্রিনো থাকতে পারে না।
    একই বছর ক্যামিওকান্ডে সূর্য থেকে নিউট্রিনো শনাক্ত করতে গিয়ে প্রত্যাশিত হারের মাত্র এক-তৃতীয়াংশ খুঁজে পেল।
    ১৯৯০- মিউন-নিউট্রিনো মিথস্ক্রিয়া শনাক্ত করার ক্ষমতার উন্নতি হলে আইএমবি মিউন-নিউট্রিনো ঘাটতির ক্যামিওকান্ডের ফলাফলকে সমর্থন করল।
    ১৯৯৪- ক্যামিওকান্ডে দেখলো উৎপন্ন হবার স্থান থেকে বড় দূরত্ব অতিক্রমকারী উচ্চ শক্তির নিউট্রিনো মিথস্ক্রিয়ার কমতি দেখা যায়।
    ১৯৯৬- সুপার-ক্যামিওকান্ডে ডিটেকটরের যাত্রা শুরু।
    ১৯৯৭- Soudan-II পরীক্ষায় প্রথমবারের মত মিউন নিউট্রিনোর অন্তর্ধান হওয়ার ঘটনা দেখা গেল। অন্তর্ধানের হার আগের পরীক্ষার সাথে মিলে গেল।
    ১৯৯৮- অশূন্য নিউট্রিনো ভরের প্রমাণ পাওয়া গেল।
    ২০১৫- তাজাকি কাজিতা ও আর্থার ম্যাকডোনাল্ড নিউট্রিনো স্পন্দন আবিষ্কারের জন্যে নোবেল পুরস্কার পান। এই আবিষ্কার থেকে জানা গেল নিউট্রিনোর ভর আছে।
    সূত্রঃ
    ১। ইউসি আরভিন স্কুল অফ ফিজিক্স 
    ২। বিবিসি
    Category: articles

    ১০ জুলাই, ২০১৫

    প্রকৃতি যে সুকৌশলে গণিত মেনে চলে তার আরেকটি উদাহরণ হলো প্রকৃতিতে পলিহেড্রনের ছড়াছড়ি। এই কথার প্রমাণ দেখার আগে চলুন চোখ ডুব দিয়ে নিই পলিহেড্রন শব্দটির গভীরে।
    আমরা সবাই জানি, প্রাচীন গ্রিক থেকে আগত polús শব্দটি থেকে আগমণ ঘটেছে পলি (Poly) শব্দের । অর্থ হচ্ছে , 'অনেক', 'বহু"। আর শব্দটির অপর অংশ hedronও এসেছে প্রাচীন গ্রিক থেকেই। ἕδρα বা hédra থেকে আগত এই শব্দটির অর্থ 'ভিত্তি', 'তল', 'মুখ' ইত্যাদি।
    অর্থ্যাৎ, সহজ কথায়, যে জ্যামিতিক গঠনের অনেকগুলো তল থাকে সেটাই পলিহেড্রন। আর, এজন্যেই এর বাংলা নামটিও হয়েছে যথার্থই-বহুতলক।  'তল' থাকে তিন বা তার অধিক মাত্রার বস্তুর। ফলে, পলিহেড্রন অবশ্যই অন্তত ত্রিমাত্রিক হবে। দ্বিমাত্রিক গঠন, যেমন বর্গ বা আয়ত কোনোভাবেই পলিহেড্রন হবে না, কারণ এদের কোন তল নেই।
    বহুতলককে দ্বিমাত্রিক বানিয়ে ফেললে আমরা পাবো বহুভূজ (Polygon)। বহুভূজদের নামের শেষে থাকে 'ভূজ' বা 'gon' কথাটি। অন্য দিকে বহুতলকদের নামের শেষে থাকে (সাধারণত) 'তলক' বা ' 'hedron' শব্দটি। তবে, কিছু পরিচিত বহুতলকের নামের শেষে হেড্রন বা তলক থাকে না, যেমন ঘনক (কিউব),পিরামিড, প্রিজম ইত্যাদি। এদের সংখ্যা অল্প।
    তলের সংখ্যা অনুসারে বহুতলকদের বিভিন্ন রূপভেদ পাওয়া যেতে পারে। যেমন, টেট্রাহেড্রন বা চতুষতলকে চারটি ত্রিভুজাকার তল থাকে যাদের তিনটি একই সাধারণ শীর্ষে মিলিত হয়।

    অবশ্য 'টেট্রা' শব্দ শুনে মনে হতে পারে, ত্রিভুজ দিয়ে কেন তল বানানো হয়েছে, চতুর্ভুজ দিয়ে কেন নয়? আসলে মাত্র চারটি তলের সমন্বয়ে গঠিত বহুতলক শুধু ত্রিভুজকে তল বানিয়েই বানানো যায়। আর কোনোভাবেই মাত্র চারটি তল দিয়ে বহুতলক হয় না।
    আটটি তলক নিয়ে গঠিত হয় অষ্টতলক বা অক্টাহেড্রন (octahedron)। ডোডেকাহেড্রনে থাকে ১২ টি তল। আবার আইকোসাহেড্রন (Icosahedron)-এ তল থাকে বিশটি।  বহুতলকদের সংখ্যাও কিন্তু বহুই।
    প্রকৃতিতে দেখা মেলে বিভিন চিত্র-বিচিত্র বহতলকের। কোনো কোনোটাতো আবার আকার নেয় প্রচলিত তারকার মতো। চতুষতলক, ঘনক ও অষ্টলতকের প্রত্যেককেই পাওয়া যায় স্ফটিকরূপে। যেমন ক্যালসিয়াম, টাইটেনিয়াম, অক্সিজেন ও সিলিকনের যৌগ টাইটেনাইট বহুতলক স্ফটিকের বেশ ভালো একটি উদাহরণ।

    ছবিতে টাইটেনিয়ামের অষ্টতলক, সিলিকার চতুষতলক এবং ক্যালসিয়ামের বিচ্ছিন্ন অণু দেখা যাচ্ছে।
    আবার বিরাইল ((Be3Al2Si6O18) যৌগে দেখা যায় চতুষতলকেরা (Tetrahedron) মিলে তৈরি করেছে ষড়কোণী বলয়। 

    কার্বনের নতুন আবিষ্কৃত অণু ফুলারিনেরও বহুতলকের সাথে দহরম মহরম সম্পর্ক।


    রসায়নেই শুধু নয়, বহুতলকের আধিপত্য রয়েছে জীববিজ্ঞানেও। বিংশ শতকের শুরুর দিকে আর্নেস্ট হেকেল রেডিওলেরিয়া পর্বের বেশ কিছু প্রাণির কঙ্কালের গঠনের বর্ণনা দেন। মূলত এদের গঠন ছিল সুষম বহুতলকের মত। অন্যতম একটি উদাহরণ হচ্ছে Circogonia icosahedra প্রাণির দেহ কাঠামো।
    অন্য দিকে, আমাদের অতি পরিচিত কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত ভাইরাস এইচআইভির গঠনও বহুতলাকার।
    মৌমাছিদের মৌচাকের গঠনের জন্য আমরা বাহবা দেই ষড়ভূজকে। প্রকৃতপক্ষে মৌচাকে ষড়ভূজাকার মুখ থাকে। কিন্তু মৌচাকের অভ্যন্তরীণ চ্যাম্বারগুলো হয় রম্বিক ডোডেকাহেড্রন আকারের। একই ধরণের আকৃতি দেখা যায় ডালিমের অভ্যন্তরের কোষের মধ্যে, বিশেষ করে যখন কোষগুলো বড় হতে থাকে।

    ভীমরুলের কামড় খেয়েছেন কখনো? কামড় খেতে ভীষণ খারাপ লাগলেও ওদের বাসা কিন্তু দেখতে দারুণ।  আকৃতিটা হচ্ছে ষড়ভূজী প্রিজমের মতো। এটাও আরেক প্রকার বহুতলকই।

    জীবজগতে আরো বহু বহুতলক থাকলেও আমরা আপাতত চোখ বুলাই অন্য দিকে।
    প্রাচীন কালে পিথাগোরাসের শিষ্যরা মনে করতেন গ্রহদের কক্ষপথ মেনে চলে বহুতলাকার আকৃতি। সপ্তদশ শতাব্দীতে জোহানেস কেপলার আরেক বিজ্ঞানী টাইকো ব্রাহের গ্রহদের গতি সংক্রান্ত সংগৃহীত উপাত্ত থেকে পিথাগোরীয়দের মতটি প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেন। তিনি গ্রহদের কক্ষপথের আকারের সাথে বহুতলকদের আকারের মিল বের করতে সচেষ্ট হন। বলাইবাহুল্য, সে চেষ্টা সফল হয়নি। কিন্তু আজকে আমরা যে গ্রহদের গতি সম্পর্কিত কেপলারের সূত্রগুলো এত সুবিন্যস্তভাবে পাচ্ছি, তার পেছনে অবদান আছে বহুতলকদের পেছনে গবেষণার। অবশ্য সেই সময় মাত্র ৫টি গ্রহের সাথে মানুষের পরিচয় ছিল বলেই প্রাথমিক অনুমানটি তৈরি হতে পেরেছিল। পরবর্তীতে ইউরেনাস ও নেপচুন আবিষ্কৃত হবার পরে এই ক্ষেত্রে পিথাগোরীয় মতবাদটির কবর রচিত হয়ে যায়।

    স্থাপত্যজগতেও বহুতলকদের রয়েছে ভালো কদর। ২০০৮ সালের সামার অলিম্পিক উপলক্ষে বেইজিং-এ নির্মিত ওয়াটার কিউবও একটি বহুতলক। অবশ্য আসলে কিউব (ঘনক) নয় বরং কিউবয়েড (Cuboid)। তাতে কি, এটাতো বহুতলকই থাকছে!

    সূত্রঃ
    [১] http://en.wikipedia.org/wiki/Polyhedron
    [২] Polyhedra_in_Nature
    Category: articles

    ১৬ জানুয়ারী, ২০১৫

    মহাবিশ্বের কার্যক্রম ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাধারণ আপেক্ষিকতা ও কোয়ান্টাম বলবিদ্যা দুইটি আলাদা ধারণা তুলে ধরে। অনেক পদার্থবিদেরই বিশ্বাস, এমন কোন তত্ত্ব নিশ্চয়ই আছে যা এই দুই মতবাদকে একই সুতোয় গাঁথবে। এমন মতবাদেরই এক প্রার্থী হল সুপারস্ট্রিং থিওরি বা সংক্ষেপে স্ট্রিং থিওরি (String Theory)। স্ট্রিং শব্দটির আভিধানিক অর্থ হল সুতা, আঁশ, তন্তু বা মালা।
    স্ট্রিং তত্ত্ব

    কোন কণা নয়, একটি সুতা মাত্রঃ 
    মাধ্যমিক স্তরের  শিক্ষার্থীরা ইলেক্ট্রন, প্রোটন, নিউট্রনসহ মৌলিক কিছু অতিপারমাণবিক কণিকা (Subatomic Particles) সম্পর্কে জানতে পারে। আমাদের জানা মতে, বস্তুর গঠনের পেছনে দায়ী এরাই। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, কিভাবে এই কণিকাগুলো চলাচল করে ও একে অপরের সাথে আচরণ করে। কিন্তু এই আচরণ বের করতে গিয়ে মুখোমুখি হতে হয়েছে একাধিক প্রশ্নের।
    স্ট্রিং থিওরির স্কেল

    স্ট্রিং থিওরির মতে, এইসব অতিপারমাণবিক কণিকার কোন অস্তিত্ত্ব নেই। এই তত্ত্ব তাদের বদলে হাজির করছে স্পন্দনশীল (Vibrating) সুতা যা অতি ছোট হওয়ায় বর্তমান যন্ত্রপাতি দিয়ে প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রত্যেকটি স্ট্রিং বা সুতা একটি লুপ বা ফাঁসে আবদ্ধ থাকতে পারে, আবার মুক্তও থাকতে পারে। স্ট্রিং এর কম্পনকেই আমরা বিভিন্ন কণিকা মনে করি এবং এই কম্পন থেকেই আমরা নানা কণিকার আকার ও ভর ধারণা করি।
    বিন্দু-সদৃশ কণিকাকে স্ট্রিং কী করে প্রতিস্থাপন করতে পারে? অতিপারমাণবিক জগতে কোন কিছুর স্পন্দনের কম্পাঙ্ক (frequency) ও তার শক্তির (Energy) মধ্যে একটি সম্পর্ক আছে। অন্য দিকে, আবার আইন্সটাইনের বিখ্যাত E=mc2 সূত্র আমাদের বলে যে, ভর (Mass) ও শক্তিও পরস্পরের মধ্যে আত্মীয়তা বজায় রাখে। তাহলে, কোন বস্তুর কম্পনের হার তথা কম্পাঙ্ক ও ভরেরও একটি সম্পর্ক থাকবে। বন্ধুর বন্ধু যেভাবে বন্ধু হয় অনেকটা সেই রকম আর কি!
    স্ট্রিং থিওরির মূলে আছে ঠিক এই সম্পর্কটাই।
    মহাবিশ্বের মাত্রা কয়টিঃ
    আইন্সটাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব মহাবিশ্বের জন্য অনেকগুলো মাত্রার দরজা খুলে দিল। আপেক্ষিকতা চার মাত্রায় যেমন খাটে তেমনি খাটতে পারে চল্লিশ মাত্রায়ও। কিন্তু স্ট্রিং থিওরি কাজ করে শুধু দশ বা এগার মাত্রায় (Dimension)। স্ট্রিং তত্ত্বের প্রমাণ পাওয়া গেলে, মহাবিশ্বে মাত্রার সংখ্যা সীমিত হয়ে যাবে।
    আমরা শুধু চারটি মাত্রার সাথেই পরিচিত। স্ট্রিং থিওরির বাকী মাত্রাগুলো কোথায়? বিজ্ঞানীদের ধারণা, এগুলো একটি সংকীর্ণ স্থানে বেঁকে আছে। স্থান ক্ষুদ্র হলে, স্ট্রিং এর মাপকাঠিতে (10-33 সে.মি.) আমরা তা দেখতে পাব না।  অথবা, অন্য মাত্রাগুলো এত বড়ও হতে পারে যে তা পরিমাপ করা আমদের সাধ্যাতীত।
    প্রমাণের সন্ধানেঃ
    ১৯৯৬ সালে, সান্তা বারবারার তাত্ত্বিক পদার্থবিদ এন্ড্রু স্ট্রমিঙ্গার এবং হার্ভাডের কামরান ভাফা একটি ব্ল্যাক হোলের সিমুলেশন করেন। ব্ল্যাক হোলটির ডিজর্ডার বা এনট্রপি ছিল মাত্রাতিরিক্ত। বিজ্ঞানী জ্যাকব বেকেন্সটাইন ও স্টিফেন হকিং ও দুই দশক আগে এমন একটি সিমুলেশন করেছিলেন। তখন কেউ বুঝতে পারেনি, একটা ব্ল্যাক হোলে কি করে এত এনট্রপি থাকতে পারে।
    আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে প্রাপ্ত ব্ল্যাক হোলদের মত করে প্রচলিত পদ্ধতিতে স্ট্রমিঙ্গার ও ভাফা ব্ল্যাক হোল তৈরি করেননি। তাঁরা এটা বানান (সিমুলেশন করেন) স্ট্রিং থিওরি দিয়ে।  ফলে অভিকর্ষের মৌলিক বল যা ব্ল্যাক হোল সৃষ্টির জন্য দায়ী ও জটিল তত্ত্বের মধ্যে লিঙ্ক তৈরি হয়। প্রথাগত কণার ধারণার বদলে স্ট্রিং তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে তাঁরা সম্ভাব্য একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্বের (সব মৌলিক বল একই উৎস থেকে আসা) বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে পেরেছেন।
    স্ট্রিং থিওরিই 'থিওরি অভ এবরিথিং' কিনা এটা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু, মহাবিশ্বের অভ্যন্তরীণ জগত ব্যখ্যার অন্যতম দাবীদার এই তত্ত্ব।
    সূত্রঃ
    ১. স্পেইস ডট কম
    ২. উইকিপিডিয়াঃ String theory
    Category: articles
    আগুণ জ্বলতে থাকার জন্যে প্রয়োজন ৩ টি জিনিস- জ্বালানী , অক্সিজেন এবং তাপ। যে কোন একটাকে সরাতে পারলেই আগুণের খেলা শেষ। 
    জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে পানি ঢালা আগুণ নেভানোর জন্যে পানি দুটো কাজ করে।

    প্রথমত, পানি জ্বলন্ত বস্তুর স্পর্শে এলেই বাষ্পীভূত হয়। ফলে, জ্বলন্ত বস্তু তার অনেকখানি উত্তাপ হারিয়ে ফেলে। এখন ঘটে মজার ব্যাপার। শীতল পানিকে ফুটন্ত অবস্থায় আনতে যে পরিমাণ উত্তাপের প্রয়োজন হয়, একই পরিমাণ ফুটন্ত পানিকে বাষ্পে পরিণত করতে তার চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি উত্তাপের প্রয়োজন হয়। মোটকথা আগুণের উত্তাপের কিছু অংশ পানির পিছনে ব্যয়িত হয়ে যাবার ফলে জ্বলন্ত বস্তু কিছুটা স্বস্তি পায়। তাছাড়া বস্তুটা তো আগের চেয়ে কম উত্তপ্ত হলোই।
    দ্বিতিয়ত, পানি বাষ্পীভূত হবার ফলে এখন তার আয়তন কয়েকশো গুণ বেড়ে গেছে। এই বাষ্প জ্বলন্ত বস্তুটিকে ঘোমটার মত ঢেকে ফেলে। ফলে জ্বলন্ত বস্তুটার কাছে বাষ্প ভেদ করে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। আর দহনের জন্য অক্সিজেনের উপস্থিতি প্রয়োজন। ফলে, আগুণ নিভতে বাধ্য।
    তার মানে, প্রথম ক্ষেত্রে কমানো হয়েছে উত্তাপ। আর ২য় ক্ষেত্রে অক্সিজেনের স্পর্শ থেকে বস্তুটাকে সুরক্ষিত করা হয়েছে। 

    Category: articles

    ৯ ডিসেম্বর, ২০১৪

    বয়স মাত্র পাঁচ। এ বয়সেই ছেলেটি 'মেনসা'র সদস্য হয়ে গেছে। মেনসা হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আইকিউ সমিতি যেখানে শুধু উচ্চমানের বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন লোকদেরকেই সদস্যপদ দেওয়া হয়। এই পরিচয়ই তার সব নয়। সে এমনই এক বালক যাকে এখন তুলনা করা হচ্ছে আইনস্টাইন, বিল গেটস ও স্টিফেন হকিং এর সাথে। তার আইকিউ ইতোমধ্যে ১৬০ ছুঁয়েছে। Wechsler Scale এই মানের বেশি আইকিউ তোলাই অসম্ভব। এ বিস্ময় বালকটির নাম শেরউইন। বাড়ি ব্রিটেনের দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারে। তার পরীক্ষা নেওয়া মনোবিদের বক্তব্য হল, 'ওর বুদ্ধিমত্তার স্তর অতি উৎকৃষ্ট মানের'।

    মেনসাতে সে যোগ দেয় তিন বছর বয়সেই। দশ মাস বয়সে কথা বলা শুরু, ২০ মাস থেকে পূর্ণাংগ বাক্য তৈরি করে করে সে তার বাবা, মা ও আত্মীয়স্বজনকে হতবাক করে দেয়। তার মানসিক বয়স এখন ৯ এর উপরে। কথা বলার সময়ও তাকে অনেক পরিণত মনে হয়।
    মনোবিদ ড. পিটার কংটন বলেন, "এমন অতি বুদ্ধিমান শিশুদের নিয়েই আমি কাজ করি। কিন্তু তাকে পরীক্ষা করে আমি বুঝলাম, ও আসলেই একটু বিশেষ রকম স্পেশাল'
    তার বয়সী ছেলেরা যেখানে এখনও স্কুলই শুরু করে না, সেখানে সে র‍্যাস্ট্রিক ইন্ডিপেনডেন্ট স্কুলে ৯ বছর বয়সীদের সমান স্তরের পড়াশোনা করছে।

    শেরউইনের মা আমান্ডা বলেন, "ও সারাদিন প্রশ্ন করে বেড়ায়, আর আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি ভালো একটা উত্তর দিতে। আমার মনে হয় প্রশ্ন করার অভ্যাসই ওর বুদ্ধিমত্তা বাড়িয়ে দিয়েছে' 
    বিশেষ কিছু গুণাবলীঃ
    * তিন বছর হবার আগেই সে ২০০ পর্যন্ত গুণতে পারত, বিশ্বের সব দেশের নাম বলতে পারত এবং আইপ্যাড ইউজ করতে পারত।
    * যে স্কুলে পাঁচ বছর না হলে ভর্তি হওয়া যায় না, সেখানে সে বয়স তিনে গড়াবার আগেই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
    * ছেলেটি জানে, কিভাবে আগ্নেয়গিরি কাজ করে, উল্কা পতিত হয়, দেহাঙ্গুণুগুলো কিভাবে কাজ করে।
    আমান্ডা বলেন, " কয়েক দিন আগে সে রাত তিনটার সময় আমাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে বলে, নিউটন কিভাবে মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কার করেছিল শোন!'

    সূত্রঃ
    ১. ডেইলিমেইল
    ২. মিরর
    ৩. উইকপিডিয়া
    Category: articles

    ২ ডিসেম্বর, ২০১৪

    ট্রেনে ভ্রমণ করছেন। আপনার কক্ষে আপনি ছাড়া আরও ৪ জন লোক আছে। ধরা যাক তাদের নাম ক, খ, গ এবং ঘ।  কিছুক্ষণ পর দেখা গেল, আপনার পেন ড্রাইভ গায়েব। আপনি নিশ্চিত, এই চারজনের কেউ না কেউই ওটা সরিয়েছে। কিভাবে ধরবেন, কে চোর।
    আপনার শুধু জানা আছে, এদের মধ্যে মাত্র একজন সত্য কথা বলে। চারজনের বক্তব্যই আপনি নিলেন যা এ রকম।
    কঃ আপনার পেন ড্রাইভ চুরি করেছে খ।
    খঃ গ ওটা চুরি করেনি
    গঃ আমি চুরি করিনি
    ঘঃ গ চুরি করেছে
    এবার বলেন তো আসলে কে চোর?
    আগে ভাবুন, পরে উত্তর মিলিয়ে নিন 



    উত্তরঃ
    চোর হল গ।
    কারণ, মাত্র একজনই সত্য কথা বলে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে খ ও গ এর বক্তব্য মিলে যাচ্ছে। কিন্তু একই সাথে দুজনেই সত্য হতে পারে না। তার মানে দু'জনেই মিথ্যা, কারণ, একই সাথে দু'জনেই মিথ্যা হতে পারে।


    Category: articles