৩ মার্চ, ২০১৪

দিকচক্রবাল (দিগন্ত) থেকে জাহাজ আসার সময় প্রথমে পাল এবং পরে মাস্তুল দেখা যায় কেন?

   



আমরা জানি পৃথিবী সমতল বা চ্যাপ্টা নয় বরং গোলকাকৃতির। আর আমরা বাস করি পৃথিবীর উপরিভাগে যাকে আমরা ভূপৃষ্ঠ বলি। এখন পৃথিবী গোলকাকার হবার কারনে এই ভূপৃষ্ঠ ও সমতল নয় বরং বক্রাকার। স্বাভাবিকভাবেই, কেউ যদি বক্রতলের কোন বস্তুর উপর দাঁড়িয়ে সোজা সামনে তাকায় তাহলে একটি নির্দির্ষ্ট দূরত্বের পরই ওই বস্তুটা্র উপরিভাগ আর দেখা যাবে না। কারণ, বক্রতার কারনে বস্তুটি সরল রেখায় থাকা দৃষ্টিসীমার নিচে পড়ে গেছে।
একইভাবে, আমরা ভূপৃষ্ঠের কোন বিন্দুতে দাঁড়িয়ে যখন সামনে তাকাই তখন আমাদের দৃষ্টি থাকে সরল রেখায়। তাই ভূপৃষ্টের যততুকু য়ামাদের দৃষ্টি রেখার সমান্তরাল থাকে ততটুকুই আমরা দেখি। এই সীমার নিচের দৃশ্য আমরা দেখি না কারণ তা আমাদের দৃষ্টি রেখার নিচে পড়ে গেছে। আর দৃষ্টিসীমা যেখানে শেষ, তাকেই বলে দিগন্ত রেখা বা দিকচক্রবাল। আমাদের মনে হয় ওই বিন্দুটিতে যেন আকাশ পৃথিবীকে ধরে ফেলেছে। আসলে এটা ঘটেছে (বা মনে হচ্ছে) পৃথিবীর বক্রতার কারণে।
কোন জাহাজ যখন আমাদের কাছাকাছি আস্তে থাকে, দূরে থাকা অবস্থায় এটি দিগন্তের ওপারে থাকে তথা আমাদের দৃষ্টিসীমার নিচে অবস্থান করে। যতই কাছাকাছই য়াসতে থাকে ততই এটি আমাদের দৃষ্টিসীমার মধ্যে প্রবেশ করতে থাকে ফলে জাহাজের উপরের অংশ থেকে ক্রমান্বয়ে নিচের দিকে দৃশ্যমান হতে থাকে। [মাথায় রাখতে হবে ভূপৃষ্ঠের বক্রতার কারণে সাগরপৃষ্ঠও কিন্তু বক্র]
এজন্যই আমরা প্রথমে জাহাজের পাল দেখি এবং ধীরে ধীরে মাস্তুল ও নিচের কাঠামো দেখি। বিপরীতভাবে, জাহাজটি যদি আমাদের থেকে দূরে সরে যায়, তাহলে আমরা দেখব, আগে নিচের অংশগুলো  অদৃশ্য হচ্ছে এবং ক্রমান্বয়ে উপরের অংশগুলো ও পাল।

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ

লেখকের পরিচয়

আব্দুল্যাহ আদিল মাহমুদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। অনলাইনে লেখালেখির হাতেখড়ি হলেও বর্তমানে পাই জিরো টু ইনফিনিটি, ব্যাপন ও প্যাপাইরাসসহ বেশ কিছু ম্যাগাজিন ও পত্রিকায় নিয়মিত লিখছেন। শখ ও ভবিষ্যত পেশাগত টার্গেট জ্যোতির্বিদ্যা ও কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি নিয়ে গবেষণা। বিশ্ব ডট কমের কন্ট্রিবিউটর, সম্পাদক ও প্রকাশক।